নেমেসিস - মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন - ইনফোক্রাঞ্চ - ছড়িয়ে পড়ুক নতুন কিছু জানার আগ্রহ

সর্বশেষ পোস্ট

ইনফোক্রাঞ্চ - ছড়িয়ে পড়ুক নতুন কিছু জানার আগ্রহ

ছড়িয়ে পড়ুক নতুন কিছু জানার আগ্রহ

test banner

Post Top Ad

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Saturday, January 27, 2018

নেমেসিস - মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন

দেশের স্বনামধন্য লেখক জায়েদ রেহমান তার নিজ ফ্ল্যাটে খুন হন। খুন হওয়ার কিছুদিন আগে থেকেই তিনি প্যারালাইজড। শুধুমাত্র ডান হাত নাড়াতে পারেন। ঘটনাক্রমে, যে রাতে জায়েদ রেহমান খুন হন সেরাতে তার এপার্টমেন্ট এর সামনে একটা ছেলেকে জায়েদ রেহমানের ফ্ল্যাটের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখেন ধানমন্ডি থানার ওসি। তাই তারা খোজ নিয়ে জানতে পারে যে জায়েদ রেহমান খুন হয়েছেন।

সকাল ৭ টার দিকে জগিং করছিলেন সিটি হোমিসাইডের নামকরা গোয়েন্দা জেফরি বেগ।আমেরিকার এফবিআই থেকে ট্রেনিং নিয়ে এসেছেন জেফরি বেগ। তার সাফল্যে সহকর্মিরা রীতিমত ঈর্ষা করে তাকে। কোনও কেসে হাত দিয়ে বিফল হয়না জেফরি। জেফরি বেগের সহকারি জামান তাকে রাস্তা থেকেই ঘটনাস্থলে নিয়ে যেতে চায়।জায়েদ রেহমানের খুনের ঘটনা তখনও সে জানেনা।সহকারি জামান কে নিয়ে তদন্তে নেমে সেদিনই অপরাধিকে ধরে ফেলে জেফরি। লেখকের দ্বিতীয় পক্ষের তরুণী স্ত্রী বর্ষার সাথে শারীরিক সম্পর্ক ছিল উঠতি নাট্যকার আলম শফিকের।সেরাতে আলম শফিক জায়েদ রেহমানের ফ্ল্যাটেই ছিল, এবং খুনের ঘটনার পর সে ফায়ার এস্কেপের সিড়ির কাছে লুকিয়ে থাকে। জেফরি বেগ ওখান থেকে ওকে গ্রেফতার করে।পরবর্তিতে বর্ষাকেও গ্রেফতার করা হয়।

বইঃ নেমেসিস
লেখকঃ মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন
প্রকাশকালঃ বইমেলা ২০১০
প্রকাশকঃ বাতিঘর প্রকাশনী
প্রচ্ছদঃ সিরাজুল ইসলাম নিউটন
পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ২৬৯
মূল্যঃ ২০০ টাকা

এর আগে এত কম সময়ে কোনও কেসের সমাধান করেনি জেফরি। তাতেই ওর খটকা লাগে। তাছাড়া লেখকের লেপটপ সিজ করার পর দেখা যায় তার ইমেইল আইডি থেকে একজন প্রকাশকের ইমেইল আইডিতে একটা মেইল করা আছে। সেখানে তিনি বলেছেন, আমাকে ক্ষমা করে দিও, আর যতো তাড়াতাড়ি পারও এই পাণ্ডুলিপি টা বই আকারে প্রকাশ করো। মেইলের সাথে একটা পাঁচশ পৃষ্ঠার পাণ্ডুলিপি এটাচড করা ছিল। লেখক যদি খুন হওয়ার আগে আগে মেইল পাঠিয়ে থাকেন তাহলে ব্যাপারটা ভাববার বিষয়। লেখকের ল্যাপটপ টা ছিল কফি টেবিলের উপর যার নাগাল পাওয়া লেখকের পক্ষে অসম্ভব। তাহলে মেইলটা করল কে? আর এসবের সাথে ঐ ছেলেটারই বা সম্পর্ক কি যে রাস্তা থেকে তার ফ্ল্যাটের দিকে তাকিয়েছিল? যদিও শেষ পান্ডুলিপি তে লেখক বলে গেছেন তিনি তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে সন্দেহ করছেন, এবং তার দ্বারা ক্ষতির আশংকা করছেন। সবকিছুই কেমন জানি এলোমেলো লাগছেনা?

ডিপার্টমেন্ট এর হেড এর অনুমতি নিয়ে প্রায় সুরাহা হয়ে যাওয়া কেসটা আবার নতুন করে তদন্ত করা শুরু করে জেফরি বেগ। এবং এবার এমন সব নির্মম সত্য ওর সামনে এসে পরে যে ও নিজেই আৎকে উঠে। বইটি পড়ার সময় পাঠকও আৎকে উঠবেন আমি শিওর।।

ব্যক্তিগত মতামতঃ
প্রথমেই বলব, লেখক এমন একটা প্লট চুজ করেছেন যেটা তখনকার একজন স্বনামধন্য লেখকের সাথে মিলে যায়। এমনকি নামগুলাও অনেক কাছাকাছি। সেই লেখকের বিখ্যাত একটি চরিত্রের ইংগিত দিয়ে সে একদম স্পষ্ট করে দেয় ব্যাপারটা। এসব কারনে বইটি অনেক বিতর্কিত হয়। তবে লেখকের ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য দারুণভাবে সফল হয়েছে। বিতর্কিত হওয়ার পর বইটির কাটতি ভালই গেছে। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, নিজে লেখক হয়ে আরেকজন লেখককে নিয়ে স্যাটায়ার করে বই লেখা তার ভালোমনের পরিচয় দেয়নি
জেফরি বেগকে অনেক দুর্বলভাবে উপাস্থাপন করা হয়েছে এখানে। এফবিআই থেকে ট্রেনিং পাওয়া একজন গোয়েন্দার চিন্তাভাবনা আরও উন্নত হওয়া উচিত। তদন্তের অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গেছে সে আরেকজনের উপর নির্ভরশীল। তাছাড়া তার রিফ্লেক্স ভালোনা। এটা লেখকের ভুল, নাকি তিনি ইচ্ছা করেই এমন করেছেন তা জানিনা।
আরেক চরিত্র বাস্টার্ড কে ঠিকভাবে লাইমলাইটে আনা হয়নি। তার নামের সাথে চরিত্রের কোন মিল নেই। লেখক তাকে রহস্যময় করে তোলার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু অনেকাংশেই ব্যর্থ হয়েছেন।

কন্ট্রিবিউটর
মাসুম আহমেদ আদি
সাপোর্ট ইঞ্জিনিয়ার
শেল অ্যান্ড কার্নেল লিমিটেড

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad

Responsive Ads Here