WWE পুরোটাই মেকি! - ইনফোক্রাঞ্চ - ছড়িয়ে পড়ুক নতুন কিছু জানার আগ্রহ

সর্বশেষ পোস্ট

ইনফোক্রাঞ্চ - ছড়িয়ে পড়ুক নতুন কিছু জানার আগ্রহ

ছড়িয়ে পড়ুক নতুন কিছু জানার আগ্রহ

test banner

Post Top Ad

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Friday, December 29, 2017

WWE পুরোটাই মেকি!

একজন মানুষ আরেকজনেক মাটিতে ঠেসে ধরেছে। পাশ থেকে ডোরাকাটা শার্ট পরা একজন মানুষ বিড়বিড় করে কী যেনো বলছেন! আর তা দেখে আশপাশের মানুষরা উৎফুল্ল। পুরো বর্ণনা শুনে বর্বর অমানবিক কোন দৃশ্য মনে হলেও টেলিভিশনে এই একই দৃশ্য দেখে আমরাই কিন্তু হাততালি দেই।

আমাদের অনেকের পছন্দের অনুষ্ঠানের তালিকাতেও রয়েছে এ ধরণের টিভি শো। টিভির পর্দায় মানুষগুলাে মারামারি করতে থাকে আর আমরা তা মুগ্ধ হয়ে আমরা তা দেখি! বলছিলাম সবচেয়ে জনপ্রিয় টিভি শো রেসলিং-এর কথা।
WWE পুরোটাই মেকি!

ওয়ার্ল্ড রেসলিং এন্টারটেইনমেন্ট (W W E)। এটি ওয়ার্ল্ড র‍্যাঙ্কিংয়ে সমস্ত রেসলিং শোয়ের মধ্যে এক নম্বর স্থান দখল করে নিয়েছে! ১৫০টিরও বেশি দেশে এটি প্রচারিত হয় এই অনুষ্ঠানটি। বছরে ৩২০টিরও বেশি লাইভ ইভেন্ট সম্প্রচার করে এরা। আমাদের দেশে TEN SPORTS চ্যানেল এ WWE-এর RAW, SMACK DOWN, BOTTOM LINE , AFTER BURN, NXT, MAIN EVENT পর্বগুলো প্রচারিত হয়।

WWE হল একটি আমেরিকান প্রাইভেট কোম্পানি যা প্রফেশনাল রেসলিং পরিচালনা করে। তবে এর পেছনের গল্প রয়েছে। প্রতিটি অনুষ্ঠানের জন্য আলাদা স্ক্রিপ্টও লেখা হয়। প্রতিটি ম্যাচ আগে থেকেই কোরিওগ্রাফ করা থাকে যাতে অভিনয় করেন পেশাদার কুস্তি বীরেরা।

এই প্রতিষ্ঠানটির প্রধান অফিস যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যামফোর্ড, কানেক্টিকাটে। এছাড়া নিউইয়র্ক, লন্ডন, টকিও, মিউনিখ, সিঙ্গাপুর ও মুম্বাইতেও এদের অফিস রয়েছে।

WWE-এর যাত্রা শুরু হয় ১৯৫২ সালে। নির্মাতা জেস মিকম্যান ও টুটস মন্ড প্রথমে এর নাম দেন Capitol Wrestling Corporation (CWC)। এরপর কয়েক বছর ধরে প্রতিষ্ঠানটি বেশ কয়েকবার নাম পাল্টায়, ১৯৬৩ সাল এর নামকরণ করা হয় World Wide Wrestling Federation (WWWF)।

১৯৮০ সালে ভিন্স মিকম্যান তার বাবা জেস মিকম্যান-এর কাছ থেকে ক্যাপিটল স্পোর্টস কিনে নেয় এবং টাইটেন স্পোর্টস স্থাপন করে। ১৯৮২ সালে World Wide Wrestling Federation এর নাম পাল্টে World wrestling federation (WWF) করা হয়। সবশেষে ২০০২ এর নামকরণ করা হয় World Wrestling Entertainment (WWE) যা এখন পর্যন্ত বহাল আছে।

ভিন্স মিকম্যান তার বাবাকে দেখে পেশা হিসেবে রেসলিংকে বেছে নিতে চাইলে জেস তাকে বাধা দেন। ১৯৭১ সালে রেসলিংয়ের ভাষ্যকার হিসেবে WWWF-এ ভিন্সের প্রথম আত্মপ্রকাশ ঘটে ।

টেলিভিশনে চারকোনা রিঙের মধ্যে আমরা যে কুস্তির মহড়া বা রেসলিং দেখি তার পুরা ব্যাপারটাই কিন্তু মেকি। কার সঙ্গে কার ম্যাচ হবে, সেখানে কে কীভাবে মারামারি করবে সবকিছুই পূর্বনির্ধারিত। সিনেমার নায়ক নায়িকাদের মত ১-২ সপ্তাহ ধরে পুরাটা কোরিওগ্রাফ না করা হলেও পেশাদার রেসলারদের আগে থেকে ব্রিফিং দেওয়া থাকে।

এমনকি খেলার সময় যিনি রেফারি থাকেন তিনিও ক্রমাগত রেসলারদের তাদের পরবর্তী মুভ কী হবে তা নিচুস্বরে বলতে থাকেন। রেফারির কানে লুকানো ছোট হেডফোন থাকে। সেটা দিয়ে কনটেন্ট রাইটার পরবর্তীতে কি ঘটবে তা রেফারিকে জানিয়ে দিতে থাকেন। খেলায় কে জিতবে বা কে হারবে তাও আগে থেকেই নির্ধারিত থাকে।

তবে রেসলারদের প্রায়ই খেলার সময় আহত হতে দেখা যায়। সেক্ষেত্রে তারা আসলেও ইনজুরির মধ্যে পড়েন। Ring match, steel cage match ইত্যাদিতে দেখা যায় রিঙের ভেতর মই আনা হয়েছে বা cage এর অনেক উঁচুতে রেসলাররা উঠে সেখানে মারামারি করতে গিয়ে নিচে পড়ে যান, এসব ম্যাচে রিংয়ের মধ্যে পাতলা ফোমের একটি প্রলেপ থাকে, যা রেসলারদের গুরুতর চোট পাওয়া থেকে রক্ষা করে।

তাছাড়া choke slam, big boot, leg drop, the rock bottom, the pedigree এসব জনপ্রিয় মুভগুলো রেসলাররা আগে থেকেই প্রাকটিস করে নেয় এবং শরীরের কোন অংশে এই মুভগুলো দিলে ব্যাথা কম লাগবে তা বুঝে নেয়।

অনেক নাম করা রেসলারকে পরবর্তীতে হলিউড মুভিতে দেখা গিয়েছ। যেমন দ্যা রক, জন সিনা, বাতিস্তা, বিগ সো, স্টোন কোল্ড, স্টিভ অস্টিন, ক্রিস জেরিকো, ত্রিপল এইচ, বিল গোল্ডবার্গ, হাল্ক হগান, কেভিন নাশ আরো অনেক রেসলারকে দেখা গেছে বিভিন্ন মুভিতে।

এসব রেসলারদের জনিপ্রয়তা কিন্তু কোন তারকা অভিনেতা বা গায়কের চেয়ে কোন অংশে কম নয়। তারা যখন কোন ট্যুরে যায় তাদের অটোগ্রাফ ও ছবি তোলার জন্য খুদে ভক্তদের বিশাল লাইন লেগে যায়। কারন খুদে ভক্তদের ধারণা বাস্তবেও এরা বােধহয় এমন মারমারি করতে পারদর্শী।

টিভিতে রেসলারদের যতোটা শক্তিশালী দেখানো হয় বাস্তব অনেকেক্ষত্রেই এর বিপরীত। ক্রিস বেনয়ট নামের একজন রেসলার তার শারীরিক গঠন ঠিক রাখার জন্য অনেক বেশি স্টেরয়েড নিতেন।

এক পর্যায়ে তিনি স্টেরয়েড নির্ভর হয়ে পড়েন, এরপর তিনি ঝুঁকে পড়েন মাদকের দিকে। তার রেসলিং ক্যারিয়ার উত্থান পতনের কারণে হতাশাগ্রস্থ হয়ে একপর্যায়ে তার স্ত্রী, সন্তানকে খুন করে নিজে আত্মহত্যা করেন। এ ঘটনার পর থেকে WWE কর্তৃপক্ষ তাদের রেসলারদের ফিটনেসের ব্যাপারে অনেক বিধিনিষেধ আরোপ করে।

বর্তমানে ভিন্স মিকম্যান WWE-এর চেয়ারম্যান এবং সিইও। তার আগে তার স্ত্রী লিন্ডা মিকম্যান CEO হিসেবে ছিলেন। ২০০৯ সালে তিনি পদত্যাগ করেন। তাদের ছেলে শেন মিকম্যান WWE-এর সঙ্গে ২০০৫ সাল পর্যন্ত জড়িত ছিলেন। ভিন্স ও লিন্ডা কন্যা স্টিফেনি মিকম্যানকে বিয়ে করেছেন জনপ্রিয় রেসলার ট্রিপল এইচ।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad

Responsive Ads Here