বাড়ির নাম নিরিবিলি। বাড়ির কর্তা সোবাহান সাহেব দুবছর হলো উকালতি থেকে রিটায়ার্ড করেছেন। তার দুই মেয়ে। বড় মেয়ে বিলু বরিশাল মেডিকেল কলেজে পড়ে। ছোট মেয়ে মিলি ইকনমিক্সে অনার্স করছে।সোবাহান সাহেবের স্ত্রি মিনু সাধারন গৃহবধূ। এবাড়িতে দুজন কাজের লোক রহিমার মা ও কাদের ছাড়াও আরেকজন থাকেন। তিনি মিলির মামা। তার কোনও কাজকর্ম নাই। সারাদিন শুয়ে বসে সিনেমা দেখে জীবন কাটানোই তার ইচ্ছা। তার আরেকটা ইচ্ছা হলো সিনেমা বানানো।
বহুব্রীহি - হুমায়ূন আহমেদ |
আনিসের মা মরা দুই ছেলে-মেয়ে টগর ও নিশা। এদের যন্ত্রনায় আনিস অতিষ্ট। ফায়ার সার্ভিস ফায়ার সার্ভিস খেলার নাম করে এরা ঘরের বিছানা এবং জানালার পর্দায় আগুন লাগিয়ে দেয়, পরে আগুন নেভাবে বলে। দর্জি দর্জি খেলার নাম করে এরা বিছানা কাঁথা বালিশ কাচি দিয়ে কেটে ফেলে। আনিসের বাড়িওয়ালা আনিস কে বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দিয়েছেন। আনিস ঘটনাক্রমে সোবাহান সাহেবের ছাদের দুইটা রুম ভাড়া নেয়।
মনসুর ডাক্তারি পাশ করে গ্রিন ফার্মেসি নামে একটা ফার্মেসিতে বসে। ফার্মেসির উপরতলায় ফার্মেসির মালিক তার থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। সোবাহান সাহেবের ছোট মেয়ে মিলি একদিন ঘটনাক্রমে তার ফার্মেসিতে আসে। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মনসুরও নিরিবিলিতে যাতায়াত শুরু করে।
হঠাৎ একদিন সোবাহান সাহেবের গ্রামের বাড়ি থেকে খোন্দকার এমদাদ সাহেব তার নাতনী পুতুল কে নিয়ে এই বাড়িতে উপস্থিৎ হয়। এমদাদ সাহেব খুবই ধড়িবাজ লোক। তার ইচ্ছা তার নাতনিকে মনসুর ডাক্তারের কাছে গছানোর।
"নিরিবিলি" নামক এই বাড়িকে কেন্দ্র করে ঘটতে থাকে নানানরকম মজার মজার ঘটনা।
ব্যক্তিগত মতামতঃ
আমি কিভাবে এই বইটা এতোদিন মিস করে গেছি সেটা চিন্তা করলেই খারাপ লাগছে। অসাধারন একটা বই। হুমায়ূন আহমেদের অনেক বই পড়লে মন খারাপ হয়ে যায়। কিন্তু এই বইয়ের প্রতিটা লাইন মজার। ভালো লাগার। মন খারাপের কোনও বিষয় এখানে নেই। মিলি, বিলু দুই বোনেরই অসাধারন বুদ্ধিমত্তা। দুবোনকেই ভালো লেগেছে। আনিসের জন্য প্রথমে মন খারাপ ছিল, সেটাও পরেরদিকে ভালো লাগাতে বদলে যায়। টগর ও নিশার দুষ্টুমিগুলাও ভালো লেগেছে। বইপোকাদের কথা দিচ্ছি ঠকবেন না বইটি পড়লে।
সতর্কতাঃ
যারা "মার্ডার ইন দ্যা ডার্ক" বইটা পড়ার লিস্টে রেখেছেন তারা সেটা শেষ না করে "বহুব্রীহি" পড়বেন না। কারন এই বইয়ে মার্ডার ইন দ্যা ডার্কের স্পয়লার দেয়া আছে।
পছন্দের উক্তিঃ তুই রাজাকার।