বিসিএস পরীক্ষার্থীদের জন্য একনজর
আমি লেখাটি যাঁদের ‘প্রস্তুতি নেই’, ‘মোটামুটি’ ও ‘ভালো না’—এই তিন ধরনের পরীক্ষার্থীর জন্য লিখেছি। বাকিরা এড়িয়ে যেতে পারেন। এই এক সপ্তাহের ঘুমকে যদি কিছুটা ‘গুডবাই’ বলতে পারেন, তবে প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় পাস করে যেতে পারবেন। যে চাকরি পেয়ে অন্তত ৩০ বছর আরাম করবেন, সেটার জন্য ছয় রাতের ঘুম হারাম করতে পারবেন না! আপনার তো স্রেফ পাস করে একটা ‘ইয়েস কার্ড’ পেলেই চলে।
এ লেখাটি পড়ার পর থেকে পরীক্ষার আগের রাত পর্যন্ত যা করতে পারেন
১. প্রশ্ন ব্যাংক থেকে আগের বছরের বিসিএসের প্রশ্নোত্তরগুলো আরেকবার দেখে নিন।
২. প্রিলিমিনারি পরীক্ষা সামনে রেখে কিছু সাধারণ জ্ঞানের ম্যাগাজিন বিশেষ সংখ্যা বের করেছে। পড়ে ফেলুন।
৩. যেকোনো ভালো একটা ডাইজেস্ট থেকে প্রশ্নোত্তরগুলোয় চোখ বুলিয়ে নিন।
৪. জব সলিউশন আগে পড়া থাকলে যতবার সম্ভব, ততবার দ্রুত রিভিশন দিন।
৫. যেসব প্রশ্নের উত্তর জানা নেই, সেগুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন। খুঁজে না পেলে খোঁজাখুঁজি করে সময় নষ্ট করবেন না। সব প্রশ্ন পারার কী দরকার? একটা কঠিন প্রশ্নেও যে নম্বর, সহজ প্রশ্নেও সেই একই নম্বর।
৬. এ সময়ে গাইড বইয়ের প্রশ্নোত্তর উল্টে-পাল্টে দেখতে পারেন, কিন্তু রেফারেন্স বই পড়বেন না।
৭. সম্ভব হলে বাইরে যাওয়া বন্ধ করে বাসায় সময় দিন। এ সময়ে পেপার পড়ে, খবর শুনে কোনো লাভ নেই।
৮.আগে যা যা পড়েছেন, সেগুলো আরেকবার দেখে নিন। শেষ মুহূর্তে পড়া জিনিস বেশি মনে থাকে।
৯. কে কী পারেন, আপনি কী পারেন না—এসব চিন্তা বাদ দিয়ে আপনি কী পারেন, সেটা নিয়ে ভাবুন। বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় প্রায়ই ‘অতি পণ্ডিত’ লোকজনও ফেল করে!
আর যা যা করতে পারেন
১. মডেল টেস্টের দু-একটা গাইড থেকে দ্রুত যত সম্ভব, তত টেস্ট দিন। অন্য কাজ বাদ দিয়ে টার্গেট নিয়ে এ কাজটি করুন।
২. আগের পাঁচ দিন যা যা দাগিয়ে পড়েছেন, সেগুলো মন দিয়ে দ্রুত রিভিশন দিন।
৩. কিছু কঠিন প্রশ্ন থাকে, যেগুলো বারবার পড়লেও মনে থাকে না৷ সেগুলো মনে রাখার চেষ্টা বাদ দিন৷ কারণ, এ ধরনের একটি প্রশ্ন আরও কয়েকটি সহজ প্রশ্নকে মাথা থেকে বের করে দেয়।
আরও কিছু কথা
সব প্রশ্নের উত্তর করতে যাবেন না ভুলেও, কিছু কিছু কঠিন আর বিভ্রান্তিকর বা গোলমেলে প্রশ্ন ছেড়ে দেওয়ার উদারতা দেখান। তবে মাথায় রাখুন, ১২টি প্রশ্ন ছেড়ে শূন্য পাওয়ার চেয়ে ছয়টি সঠিক করে তিন পাওয়া অনেক ভালো। এ ধরনের পরীক্ষাগুলোয় ভালো করার ক্ষেত্রে প্রস্তুতির চেয়ে আত্মবিশ্বাস বেশি কাজে লাগে৷ প্রশ্নে দু-একটা ছোটখাটো ভুল থাকতেই পারে৷ এটা নিয়ে মাথা খারাপ করার কিছু নেই৷
বৃহস্পতিবার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গুছিয়ে নিয়ে রাত নয়টার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়ুন৷ দুই ঘণ্টা মাথা ঠিক রাখার জন্য দারুণ একটা ঘুম অনেক সাহায্য করে৷ পরীক্ষার দিন সকালে আপনি যা যা ভালো পারেন, শুধু সেগুলোয় একটু অতিদ্রুত চোখ বুলিয়ে নিন। রাস্তায় কিছুই পড়ার প্রয়োজন নেই৷ টেনশন থাকবেই। পরীক্ষার আগে টেনশন করাটাও একটা সাধারণ ভদ্রতা! পরীক্ষার দিন সকালে বাসায় কিংবা রাস্তায় কিছুই পড়ার প্রয়োজন নেই৷ দুশ্চিন্তামুক্ত থাকুন৷ আত্মবিশ্বাস রাখুন৷ রাস্তায় যানজট থাকতে পারে, তাই হাতে যথেষ্ট সময় নিয়ে বাসা থেকে রওনা হবেন, তাড়াহুড়ো করবেন না। আপনাদের জন্য শুভকামনা।
বিঃদ্রঃ যাদের তেমন প্রস্তুতি নেই এবং পরীক্ষা সন্নিকটে তাদের জন্য এই পরামর্শগুলো সুশান্ত পাল লিখেছিলেন প্রথম আলোতে।
No comments:
Post a Comment