একজন অ্যাথলেটের ফর্ম বা পারফর্মেন্সের পিছনে ফিটনেস বড় ভূমিকা পালন করে। ফিটনেস ধরে রাখা একজন অ্যাথলেটের জন্য বড় একটি চ্যালেঞ্জ। অ্যাথলেটদের ফিটনেস পরীক্ষা করার জন্য বিভিন্ন টেস্টের মধ্য দিয়ে যেতে হয় তাদের। এর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ টেস্ট হল মাল্টি-স্টেজ ফিটনেস টেস্ট।
এই টেস্টে মূলত অ্যাথলেটদের দৌড়ের সক্ষমতাই পরীক্ষা করে দেখা হয়। দৌড়ের মধ্য দিয়ে একজন অ্যাথলেট কতখানি অক্সিজেন নিচ্ছেন এবং কতখানি শক্তি তাঁর পরিশ্রমের ফলে খরচ হচ্ছে তা বের করাই মাল্টি-স্টেজ ফিটনেস টেস্টের উদ্দেশ্য। একে বীপ টেস্ট, ব্লিপ টেস্ট, পেসার টেস্ট, শাটল রান টেস্ট ইত্যাদি নামেও ডাকা হয়। রাগবি, ফুটবল, হ্যান্ডবল, টেনিস, স্কোয়াশ, প্রভৃতি খেলার খেলোয়াড়দের এই টেস্টের ভেতর দিয়ে যাওয়া অত্যন্ত জরুরী। এই টেস্টে অংশগ্রহণকারীদের একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব একটি নির্দিষ্ট সময়ের ভেতরে পার হতে হয়।
১৯৮২ সালে মট্রিল ইউনিভার্সিটির লুক লেগার মাল্টি-স্টেজ ফিটনেস টেস্টের উদ্ভাবন করেন। এই টেস্টে অংশগ্রহণকারীদের একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব একটি নির্দিষ্ট সময়ের ভেতরে পার হতে হয়।
এই টেস্টের জন্য অ্যাথলেটকে ২০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি জায়গায় অবস্থান করতে হয়। জায়গাটির শুরুতে একটি লাইন এবং শেষে আরেকটি লাইন থাকে।
প্রথম লাইন থেকে দ্বিতীয় লাইনের দূরত্ব কমপক্ষে ২০ মিটার হতে হয়। অ্যাথলেটের লক্ষ্য হল, এই জায়গাটিতে ক্রমাগত প্রথম থেকে শেষে দৌড়ে যাওয়া এবং আবার ফিরে আসা।
এই দৌড়ে যাওয়া আর ফিরে আসার মধ্যেও একটি কৌশল আছে যা এই টেস্টের বিশেষত্ব। অ্যাথলেট দৌড় শুরু করার আগে প্রশিক্ষক একটি অডিও রেকর্ডারে নির্দিষ্ট সময় পর পর কিছু “বীপ” রেকর্ড করে রাখেন এবং অ্যাথলেট দৌড় শুরু করার পর তা চালু করে দেওয়া হয়।
অ্যাথলেটকে প্রথমে ধীরে ধীরে দৌড়ানো শুরু করতে হয়, প্রথম লাইন থেকে দৌড়িয়ে দ্বিতীয় লাইনে পোঁছার পর বীপ শোনার সাথে সাথেই আবার ঘুরে আসতে হয়। কোনো বীপ শোনার আগেই যদি অ্যাথলেট অপর লাইনে পৌঁছে যায়, তাহলে তখন ফিরে না এসে বীপ শোনার জন্য অপেক্ষা করতে হয়। আবার যদি কোনো বীপের সাথে তাল মিলিয়ে যদি কোন রাউন্ড শেষ করতে না পারে, তাহলে গতি বাড়িয়ে বীপের সাথে তাল মেলাতে হয়।
এখানেই শেষ নয়, নির্দিষ্ট সময় পর আরেকটি বীপ বাজবে যার মানে হল অ্যাথলেটকে এখন পূর্বের চেয়ে গতি বাড়িয়ে দৌড়াতে হবে। এক্ষেত্রে প্রতিটি রাউন্ডে বীপগুলোর প্রতিটির মধ্যবর্তী সময় ধীরে ধীরে কমে আসে। তাই, বীপের সাথে তাল মিলিয়ে দৌড়াতে অ্যাথলেটকে প্রতিবার বীপ শোনার পর গতি বাড়াতে হয়।
এখন অবশ্য বীপ টেস্ট বেশ জনপ্রিয় হয়ে যাওয়াতে কম্পিউটার সফটওয়্যার হিসেবে বীপ টেস্ট রেকর্ডার পাওয়া যায়। এতে সাধারণত ৮.৫ কিঃ মিঃ/ঘণ্টা গতিতে দৌড় শুরু করার হিসেবে বীপগুলো রেকর্ড করা থাকে।
ভিডিও দেখুন-
No comments:
Post a Comment