দুই হাজার বছরেরও আগের কথা। দেবতা "আইসিস" এর মিশরীয় পুরোহিতদের একজন ছিলেন ক্যালিক্রেটিস। ফারাও পরিবারের এক রাজকন্যা ক্যালিক্রেটিসের প্রেমে পড়ে যান। খ্রীষ্টপূর্ব ৩৩৯ অব্দের দিকে ফারাওদের চূড়ান্ত পতনের সময় মিশর থেকে পালিয়ে গেলেন ক্যালিক্রেটিস। সঙ্গে নিয়ে গেলেন রাজকন্যা আমেনার্তাসকে। কৌমার্যের ব্রত ভঙ্গ করে সেই রাজকন্যাকে বিয়ে করেন ক্যালিক্রেটিস। জলপথে পালাচ্ছিলেন তারা। জাহাজডুবিতে ওরা দুজন ছাড়া সবাই মারা পড়ল। কোনওরকমে তীরে উঠেন দুজন। জায়গাটা আফ্রিকা উপকূলে, ডেলাগোয়া উপসাগরের উত্তরে। সেখানে জংলি জাতির দোর্দণ্ড প্রতাপ এক রানীর অনুগ্রহ লাভ করেন তারা। জাতিটা জংলি হলেও তাদের রানী অদ্ভূত সুন্দর আর শ্বেতাঙ্গিনী।
অদ্ভূত সেই রানীর নাম আয়শা। আরবদেরও আরব এক বংশের মেয়ে আয়শা। অপরূপ সুন্দর এ নারী আফ্রিকা উপকূলের এখানে এসে স্থায়ী হন, এবং সেখানকার জংলি জাতির রানী হিসেবেই বসবাস করতে শুরু করেন। ক্যালিক্রেটিস কে দেখা মাত্রই তার প্রেমে পড়ে যায় আয়শা। কিন্তু আয়শার অপরূপ সৌন্দর্যকে পাত্তা না দিয়ে নিজের স্ত্রীকে আঁকড়ে ধরেন ক্যালিক্রেটিস। তখন ক্রোধের বশবর্তী হয়ে ক্যালিক্রেটিসকে খুন করেন আয়শা। ক্যালিক্রেটিসের স্ত্রী আমেনার্তাস তার শিশুপুত্র কে নিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যান। তারপর ছেলে টিসিসথেনেসের উদ্দেশ্যে চিনামাটির পাত্রে লিখে রেখে যান ক্যালিক্রেটিসকে কিভাবে হত্যা করা হয়। ছেলেকে নির্দেশ দিয়ে তিনি লেখেন, সে যেন পিতৃহত্যার শোধ নেয়। তারপর টিসিসথেনেস চেষ্টা করে বাবার হত্যার প্রতিশোধ নিতে। সে পারেনি, তাই ঐ একই পাত্রে তার ছেলেকে উদ্দেশ্য করে লিখে যায় শোধ নেয়ার জন্য। এভাবে ৬৭ পুরুষ ঘুরে প্রায় দুই হাজার বছর পর এই পাত্র এসে পড়ে "লিও" এর হাতে। লিও এর বাবা নিজেও এই রহস্যের সমাধান করার চেষ্টা করেন। এবং তিনি কিছুটা অগ্রসরও হন। শেষে তার মৃত্যু ঘনিয়ে আসলে সে লিও এর জন্য ঐ পাত্রসহ আরও কিছু ডকুমেন্ট রেখে যায়।
বইঃ শী
লেখকঃ স্যার হেনরি রাইডার হ্যাগার্ড
রূপান্তরঃ নিয়াজ মোরশেদ
প্রকাশকালঃ ১৯৮৫
দুই খন্ড একত্রেঃ ২০১১
প্রকাশকঃ সেবা প্রকাশনী
প্রচ্ছদঃ ইসমাইল আরমান।
পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ৩৪৪ (দুই খন্ড একত্রে)
মূল্যঃ ৮৮ টাকা (দুই খন্ড একত্রে)
ক্যালিক্রেটিসকে খুন করার পর অনুশোচনায় মুষড়ে পড়ে আয়শা। তার দৃঢ় বিশ্বাস ক্যালিক্রেটিস ফিরে আসবে তার কাছে পুনর্জনম নিয়ে। সে অপেক্ষা করতে থাকে তার জন্যে।
শী অ্যান্ড অ্যালান - স্যার হেনরি রাইডার হ্যাগার্ড
লিও রওনা হচ্ছে সেই আফ্রিকার উপকূলে যাওয়ার জন্য। তার সঙ্গি হিসেবে আছেন তার অভিভাবক হোরেস হলি এবং চাকর জব। দুই হাজার বছর পরও কি দেখা মিলবে সেই রানী আয়শার? কিভাবে সম্ভব এটা? কিন্তু লিও এর বাবা যে ডকুমেন্ট রেখে গেছেন, তা প্রমাণ করেন যে 'সে' এখনও আছে। দুই হাজার বছর পর্যন্ত বেচে থাকার রহস্য কি? লিও কি তাকে দেখে তার প্রেমে পড়ে যাবে? নাকি পূর্বপুরুষের হত্যার প্রতিশোধ নিবে? একটা কথা বলার লোভ সামলাতে পারছিনাঃ- লিও কিন্তু দেখতে অবিকল তার পূর্বপুরুষ ক্যালিক্রেটিসের মত।
ব্যক্তিগত মতামতঃ
নতুন করে কিছু বলার নেই। ভক্ত হয়ে গেছি আমি স্যার হ্যাগার্ড এর। শী পড়তে পড়তে বারবার রোমাঞ্চিত হয়েছি। পড়ের খন্ড পড়ার জন্য ধৈর্য ধরতে পারছিনা। পড়ে কথা হবে, রিটার্ন অব শী শেষ করে আসি।
No comments:
Post a Comment