শুধু শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদে আজকাল চাকরি জোটানো দায়। সঙ্গে অভিজ্ঞতার সনদও থাকা চাই। বলতে পারেন পড়াশোনা শেষে চাকরি পেলে তবেই তো হবে ‘অভিজ্ঞতা’!
কিন্তু এমন কিছু পেশাগত কোর্স রয়েছে, যা আপনাকে নিয়ে যাবে অভিজ্ঞদের কাতারে। তেমনি একটি কোর্স চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্সি বা সিএ। হিসাববিদ্যায় যা আন্তর্জাতিক মানের পেশাগত সনদগুলোর মধ্যে অন্যতম। বাংলাদেশে হিসাবরক্ষণের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পেশাগত এই ডিগ্রি দিয়ে থাকে আইসিএবি। দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশের সংক্ষিপ্ত রূপ আইসিএবি।
আইসিএবি নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান
আইসিএবি নিবন্ধিত প্রায় ২০০টি সিএ ফার্ম রয়েছে। ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম, খুলনা ও সিলেটেও কিছু ফার্ম রয়েছে। পছন্দমতো একটি সিএ ফার্মে যুক্ত হতে হবে। অধিকাংশ ফার্ম নতুন শিক্ষার্থী নেওয়ার ক্ষেত্রে পরীক্ষা নিয়ে থাকে। পরীক্ষায় মূলত মৌলিক হিসাববিজ্ঞান ও ইংরেজির ওপর দক্ষতা যাচাই করা হয়। পরবর্তী সময়ে এসব সিএ ফার্ম থেকে আইসিএবিতে রেজিস্ট্রেশন করানো হয়।
ভর্তি যোগ্যতা
এইচএসসি পাসের পরই সিএ কোর্সে ভর্তির আবেদন করা যায়। সে ক্ষেত্রে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় কোনো একটিতে জিপিএ-৫ সহ ন্যূনতম ৯ পয়েন্ট থাকতে হবে। ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ও-লেভেলে ন্যূনতম ৩৮ পয়েন্ট (সর্বনিম্ন ৫ বিষয়ে, সর্বোচ্চ ৭ বিষয়ে) এবং এ লেভেলে ন্যূনতম ১২ পয়েন্ট (৩ বিষয়ে) পেতে হবে। এ ক্ষেত্রে ‘এ’ গ্রেড সমান ১০ পয়েন্ট, ‘বি’ গ্রেড সমান ৬ পয়েন্ট, ‘সি’ গ্রেড সমান ৪ পয়েন্ট হিসাব করা হবে। যেকোনো বিষয়ে স্নাতক অথবা স্নাতকোত্তর শেষে আবেদন করতে চাইলে উভয় পরীক্ষায় ন্যূনতম দ্বিতীয় বিভাগ থাকতে হবে। সিজিপিএ-৪-এর মধ্যে ২.৫ থেকে ৩ এবং সিজিপিএ-৫-এর মধ্যে ৩ থেকে ৪-কে দ্বিতীয় বিভাগ ধরা হয়।
খরচাপাতি
আইসিএবিতে নিবন্ধন বাবদ ব্যয় হয় ৩০ হাজার টাকা। এই নিবন্ধন খরচে অন্তর্ভুক্ত থাকবে পাঠ্যবই, কোচিং ফি ও গ্রন্থাগার ব্যবহারের সুযোগ। সিএ কোর্সের মোট তিনটি লেভেল রয়েছে। এগুলো হচ্ছে নলেজ লেভেল, অ্যাপ্লিকেশন লেভেল ও অ্যাডভান্স লেভেল। নলেজ লেভেলে পড়তে হবে সাতটি বিষয়। এই লেভেলে পরীক্ষার জন্য বিষয় প্রতি ফি দিতে হবে ১ হাজার ৩০০ টাকা করে। অ্যাপ্লিকেশন লেভেলেও থাকছে সাতটি বিষয়। অ্যাপ্লিকেশন লেভেলে বিষয় প্রতি ফি ৩ হাজার টাকা। সর্বশেষ অ্যাডভান্স লেভেলে তিনটি পাঠ্য বিষয় ও কেস স্টাডিসহ খরচ হবে ৪৩ হাজার টাকা।
বৃত্তি সুবিধা
‘আর্টিকল পিরিয়ডে’ একজন শিক্ষার্থীকে ফার্ম থেকে প্রতি মাসে নির্ধারিত হারে ভাতা দেওয়া হয়। এ ছাড়া মেধাবী শিক্ষার্থীদের আইসিএবি থেকে বৃত্তির ব্যবস্থা করা হয়।
কোর্স সমাপ্তি (সিসি)
আগেই বলেছি সিএ কোর্স অনেকটা ব্যবহারিক জ্ঞাননির্ভর। তাই বাধ্যতামূলকভাবে কয়েক বছর শিক্ষার্থীদের ফার্মের সঙ্গে যুক্ত থাকতে হয়। যাঁরা এইচএসসি বা ও-লেভেল শেষে ভর্তি হন তাঁদের জন্য এই সময়টা চার বছর। স্নাতক অথবা স্নাতকোত্তর শেষে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য তিন বছর। এই সময়ের সঙ্গে কিন্তু সিএ সনদ অর্জনের কোনো সম্পর্ক নেই। কারণ পরীক্ষা আইসিএবির তত্ত্বাবধানে, আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসারে হয়ে থাকে।
আরো জানতে
ঢাকার কারওয়ান বাজারে আইসিএবি ভবন ও চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ে হাজির হতে পারেন। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটির অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে মিলবে ফার্মের নাম-ঠিকানা ও ভর্তিসংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য।
এছাড়াও পড়ুনঃ চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্সির ১০টি "কিউ অ্যান্ড এ"
No comments:
Post a Comment